মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে মৌসুমি ফল লটকন চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অনেক কৃষক। স্বল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় লটকন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেকে। শুধু দেশেই নয়, বিদেশের বাজারেও রপ্তানি হচ্ছে এই ফলটি। দেশ-বিদেশে চাহিদা বাড়ায় পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে পুষ্টি ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ এই লটকন। দিন দিন বাড়ছে লটকন চাষি ও আবাদি জমির পরিমাণও। বাড়ির আশপাশের পতিত জমিতে এবং ফল ও সুপারির বাগানের পাশে সাথি ফসল হিসেবে অল্প খরচে সহজেই গড়ে তোলা যায় লটকনের বাগান। এই জেলার মাটি ও আবহাওয়া লটকন চাষের জন্য উপযোগী। চারা লাগানোর তিন থেকে চার বছরেই ফল ধরে গাছে। এসব বাগানের গাছে গোড়া থেকে মগডাল পর্যন্ত লটকন ধরে। সুস্বাদু এই ফল চাষে খুব বেশি খরচ নেই। গোবর সার ছাড়া অন্য কোনো রাসায়নিক সার প্রয়োজন পড়ে না।
দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের তিস্তাপাড়া গ্রামের লটকন চাষি গকুল চন্দ্র রায় জানান, তিনি ৯ বিঘা জমিতে সুপারির বাগানে সাথি ফসল হিসেবে লটকন বাগান করেছেন। এই বাগানে ৭০টি লটকন গাছ রয়েছে। কয়েক বছর ধরে তিনি লটকন বিক্রি করে আসছেন। এ বছর তিনি তিন লাখ বিশ হাজার টাকার লটকন ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছেন। এই ব্যবসায়ীরা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকার লটকন চাষি শহিদুল্লাহ বলেন, সুপারির পাশাপাশি আমার বাগানে ১৫টি লটকন গাছ আছে। লটকন চাষে পরিশ্রম নেই বললেই চলে। এবার আমি ৪৮ হাজার টাকার লটকন বিক্রি করেছি।
হাড়িভাসা এলাকার লটকন চাষি আব্দুল হাই বলেন, লটকন ফল বিক্রি নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হয় না। লটকন ফলন ধরার পর জমিতেই পাইকারি বিক্রি করে দেওয়া যায়। পাইকাররা বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, পঞ্চগড়ের মাটি আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করায় এখানে লটকনের আবাদ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা চাষিদের সার্বক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি। জেলায় এবার ৩৩ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে লটকন
৮৭